এস কে বাপ্পি খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে জমির উপরিভাগ কেটে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। যে যার ইচ্ছামতো খনন ও ভিটা তৈরীতে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রি ও ব্যবহার করছেন।
কৃষি অধিদপ্তর বলেছে ফসলি জমির উপরিভাগের ছয় থেকে সাত ইঞ্চির মধ্যেই সব ধরনের জৈব গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়ার ফলে এসব জমির উৎপাদন ক্ষমতা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাবে।
অপরদিকে ২০১৬ সালের কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইনের ৪ এর ১ ধারায় বলা হয়েছে বাংলাদেশের যে সকল কৃষি জমি রয়েছে, তা এই আইনের মাধ্যমে সুরক্ষা করতে হবে এবং কোনোভাবেই তার ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না।
সম্প্রতি উপজেলার বেশ কয়টি চক্র প্রশাসনের কোন রকমের অনুমতি ছাড়াই ফসলি জমি থেকে এস্কোভেটর মেশিন দিয়ে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে ধান সবজি ও মাছ চাষের পুকুর, বসতভিটা তৈরি ও জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ট্রাক্টর দ্বারা বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে আসছে। এস্কোভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলনের ফলে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকেরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, যেভাবে জমি কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে, এতে করে পার্শ্ববর্তী জমি ধসে ভবিষ্যতে গর্তে পরিণত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এসব মাটি উত্তোলনকৃত জমির প্বার্শবর্তী কৃষকরা। এই চিত্র উপজেলার প্রায় সবকটি এলাকায়।
সরেজমিনে দেখাযায়, উপজেলা টিপনা এলাকায় বেলেখালী সংযোগ ব্যক্তি মালিকানাধীন ও খাস কৃষি জমি থেকে দিনদুপুরে ও রাতের আঁধারে এস্কোভেটর দিয়ে জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছেন।
মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকার মিনারুল ইসলাম। সরেজমিনে যেয়ে মিনারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে কোন প্রকার অনুমতি আছে কিনা তিনি জানান, না বলে মাটি কাটছি, বাদ দেন ভাই। ৪ দিন আগে ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার ভূমি, সরেজমিনে এসে দেখে গিছে। আমি জমির মালিক মোঃ মুজিবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যে মাটি ক্রয় করে এস্কোভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ডাম্পার ট্রাকে রশিদ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছি।
সরেজমিনে গণমাধ্যম কর্মীদের সংবাদ প্রকাশ না করতে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ ও রেজাউল। মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী উপজেলা সদরের সাজিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম।
এ ঘটনার বিষয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আরাফাত হোসেন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি না স্বীকার করে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাইনি। পরবর্তীতে জানান অবৈধভাবে এস্কোভেটর দ্বারা কৃষি জমির মাটি উত্তোলন ও অবৈধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।