রমযান মাসটা তো প্রায় শ্যাষ। কেউ কিচ্ছু দেয় নাই। আজ পুলিশ আসি মেলা কিছু দেইল। ঈদ পর্যন্ত ভালোই চলবে। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন, কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পুরাতন সিএন্ডবি ঘাটের ধরলা নদীর অববাহিকার দিনমজুর রহিম মিয়া (৫৫)। তিনি বলেন, বর্তমান কাজও কম, একদিন কাজ হয়, একদিন নাই। সংসারে ৫-৬ জন সদস্য সংসার চালা খুব মুসকিল হইছে বর্তমান। এই কষ্টের সময় চাউল,ডালসহ মেলা কিছু দিল পুলিশ। এগলা প্যায়া খুব ভালো হইছে। আমরা সবাই খুব খুশি।
আমিনা বেওয়া (৬০), নামের এক বৃদ্ধা নারী বলেন, মুই ভিক্ষা করি খাং। মোর কাইও নাই সংসারে। আজ পুলিশের মেলা খাবার পানু। ঈদ পর্যন্ত মোর আর চিন্তা নাই, খাওয়া নিয়্যা।
আজ শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর অববাহিকাসহ জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় প্রায় দেড় শতাধিক দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।
এসব অসহায় মানুষের জন্য ইফতার সামগ্রী হিসেবে একটি পরিবেশ বান্ধব পাটের ব্যাগে ছিল ৫ কেজি বাসমতি চাল, ১কেজি মসুর ডাল, দেড় কেজি ছোলা, ২লিটার সয়াবিন তেল, ১কেজি চিনি, ১প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই ও ২টি প্যাকেট পাউডার দুধ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সদস সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওহিদ্দুরনবী, সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বানিউল আনামসহ অন্যন্য পুলিশ সদস্যরা।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিবছরই ঢাকায় একটি বড় ইফতার পার্টির আয়োজন করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইফতার পার্টি না করে দু:স্থ ও অসহায়দের পাশে থাকতে বলেছেন। তাই আইজিপি স্যার বাংলাদেশ পুলিশের ইফতার আয়োজন না করে তা বিভিন্ন জেলার অসহায় ও দু:স্থদের মাঝে বিতরণ করতে বলেছেন।
সেই উদ্যোগে আজ আমরা কুড়িগ্রামের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় একদম অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে রমজান মাস উপলক্ষে উন্নত মানের একটি প্যাকেজ ইফতার সামগ্রী ১৫০ জনের মাঝে বিতরণ করতে পারায় ধন্য মনে করছি। এমন পরার্থপর মানবিক কাজ আমরা এর আগেও অনেকবার করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের এমন কাজ আগামীতে অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।