ডেস্ক রিপোর্টঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ২৪টি লেগুনা আটকে রাখা অভিযোগ উঠেছে। তবে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লেগুনাগুলো আটক করে রেখেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান, শাহ পরাণ ও হাসান মাহমুদ ফরিদ, যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, লেলিন মাহবুব এবং উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক আল-রাজি সরকার প্রমুখ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল গেইটের সামনে অবস্থান নিয়ে লেগুনাগুলো আটকানো শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন লেগুনাগুলোর চাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে চলে যান।
এরপর রাতে লেগুনা মালিক সমিতির নেতারা আসলে কয়েকটি লেগুনা ছেড়ে দেওয়া হয়। ১১টি লেগুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে নিয়ে আটকে রাখা হয়। গতকাল বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেলে আরও ১৩টি লেগুনা আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নিয়ে আসা হয়। সে হিসেবে মোট ২৪ টি লেগুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশে রাখা হয়েছে। তবে মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা না করে লেগুনাগুলো ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা।
লেগুনার চালক ও মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাভার থেকে আশুলিয়া রুটে প্রায় দুই শতাধিক লেগুনা নিয়মিত চলাচল করে। সেগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাদের দিনপ্রতি ২৫ টাকা করে চাঁদা দিতে হতো। সে হিসেবে মাসিক দেড় লাখ টাকা চাঁদা দিতো তারা। তবে বিগত দুই মাস ধরে চাঁদা দেওয়া বন্ধ ছিলো। তার প্রেক্ষিতে আবারও লেগুনা থেকে চাঁদা আদায়ের চুক্তি করতে চায় ছাত্রলীগ নেতারা। এবার লেগুনা প্রতি ১০০ টাকা দাবি করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা। তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মালিক পক্ষ। তাই লেগুনা আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন চালক ও মালিক পক্ষের নেতারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, সাভার থেকে আশুলিয়াগামী একটি লেগুনা সিএন্ডবি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র তানভীর 3 তারেকের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। তাই তিনটি লেগুনা আটকে রাখা হয়। তবে চালকেরা নকল চাবি দিয়ে সেগুলো নিয়ে চলে যান। এরপর ক্ষোভে শিক্ষার্থীরা লেগুনাগুলো আটক করেছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলার জন্য ডাকা হলেও তারা আসছেন না, তাহলে কাদের ভরসায় লেগুনাগুলো ছেড়ে দিবো?
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'হলের ছোট ভাইয়েরা লেগুনাগুলো আটকায়। তাই মালিক পক্ষের সাথে কথা বলার জন্য ডেকেছি, তবে তারা আসেনি। এভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি তো সড়কে চলতে পারে না। মালিকপক্ষ না আসলে, কাদের কাছে গাড়ীগুলো দিবো?'
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফরিদ হোসেন বলেন, 'হলের দুই ছোট ভাইয়ের মোটরসাইকেলে একটি লেগুনা ধাক্কা দেয়। তাই তাদের দাবি অনুযায়ী লেগুনাগুলো আটকানো হয়েছে। তবে টাকা লেনদেনের বিষয়ে কিছু জানি না।'
লেগুনা থেকে চাঁদাদাবির বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ- উল-হাসানের-হাসান বলেন, লেগুনা গুলো আটকে রাখা হয়েছে। তাদের মালিকরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে একটা সমাধান করা যেতো। কিন্তু মালিকরা যোগাযোগ করছেন।
সি, কে, বিঃ নিউজবিডিজার্নালিস্ট২৪