ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় কয়রা উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি

লেখক:
প্রকাশ: 2 years ago

ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় কয়রা উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি
সুমন হাসান
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি:
 উপকূলীয় জনপদ খুলনার কয়রায় ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবিলায় সাত ইউনিয়নে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা” মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানে পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মত মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। পাশা-পাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ,সরকারি-বে-সরকারি ভবনগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গৃহপালিত প্রাণিদের জন্যও নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ১২ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসুচীর (সিপিপি)সহ বিভিন্ন স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন।
উপজেলা সিপিপির টিম লেডার জিএম আব্দুল্যাহ আল মামুন লাভলু বলেন, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে সাত ইউনিয়নে ১৪৬০ জন ভলেনটিয়ার স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৭৩০ ও নারী ৭৩০ জন ।
কয়রা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মোশাররফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওঃ নূরুল্লাহ জানান, আমার বিদ্যালয়ের সরকারি ভবনে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে সেবা দেওয়ার জন্য অত্র এলাকার ২০০০
জনসাধারণ আশ্রয় নিতে পারবে। সেবা হিসেবে এখানে ৫০০০ লিটারের ৫ টি সুপেয় পানির ট্যাংকি রয়েছে যাতে ২৫০০০ লিটার পানি ধারন করা রয়েছে। রয়েছে উচ্চ ওয়াট সম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎ , এবং চিকিৎসার জন্য গ্রাম্য ডাক্তার প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মোমিনুর রহমান বলেন,, প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য কয়রা উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘরোয়া বিষয়ে সতর্কতা মুলক প্রচার করা হয়। দুর্যোগের সময় আশ্রায় কেন্দ্র সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান কারীদের খাদ্য সরবরাহ এবং চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখ ভাল করার জন্য কয়রা উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক  প্রস্তুত থাকবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস বা যে কোন দুর্যোগের সময় মানুষের জান মালের নিরাপত্তার জন্য সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান কারীদের পর্যাপ্ত খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে সে জন্য উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন,,ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, আম্ফান ও সিত্রাং এর আতংক কেটে গেলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আতংক কাটেনি উপকূলীয় জনপদ কয়রাবাসীর। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। নদী ভাঙন, জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা করে আমরা এই উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করছি।   তাই আমাদের সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হবে।
error: Content is protected !!