খাগড়াছড়ির পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের কুড়াদিয়াছড়া এলাকায় অবস্থিত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গামন্দির পূজামণ্ডপ।
মণ্ডপের সিংহের ওপর দেবী দুর্গা আসীন। দশরথী দুর্গার পরনে শাড়ির পরিবর্তে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই ও রিসা।
খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের কুড়াদিয়াছড়া এলাকায় পূজামণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশমুখ থেকে মণ্ডপ পর্যন্ত সাজসজ্জার বেশ। জানা যায়, এলাকায় ২০০৩ সাল থেকে কিরণ ত্রিপুরার উদ্যোগে শুরু করা হয় দুর্গাপূজা। ত্রিপুরাদের নিজস্ব পোশাকে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে পূজা করে আসছে এলাকাবাসীরা। প্রতিবছর এ ভিন্ন ধরনের প্রতিমা তৈরিতে দর্শনার্থীরাও আসে দূর-দূরান্ত থেকে।
দেবীর ডান পাশে লক্ষ্মী ও গণেশ, বাম পাশে সরস্বতী ও কার্তিক। তাদের পরনেও ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও অলংকার। দূর থেকে দেখেই মনে হয় দেবী স্বয়ং এসে উপস্থিত হয়েছেন সন্তানদের নিয়ে।
এ ব্যাপারে কুড়াদিয়াছড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গামন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জুয়েল ত্রিপুরা বলেছেন, প্রতিবছরের মতো এবছরও আমরা আমাদের ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে মা দুর্গাকে সাজিয়েছি। কেননা আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আমাদের পরিচয়। সকলে মিলে সার্বজনীন ভাবে ভিন্ন সাজের প্রতিমার কারণে পুজার সময় দর্শনার্থী বেশি থাকে । তাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার জন্য পূজামণ্ডপে জেলা প্রশাসনের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক টিমও গঠন করা হয়েছে। তারাও নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে আছে।
দূর্গামন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুকেন ত্রিপুরা(অমল) বলেন, দেবী দুর্গার পরনে শাড়ির পরিবর্তে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই ও রিসা দিয়ে সাজিয়েছি, ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো ত্রিপুরা পোশাক মাধুর্য ধরে রাখতে।
কুড়াদিয়াছড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিতা ত্রিপুরা বলেন, ২০০৩ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরে দূর্গা পূজা উদযাপন করে আসছি।
অমর জ্যোতি ত্রিপুরা বলেন, শারদীয় দূর্গাপুজা উৎসবকে আনন্দ উপভোগ করতে, দেশ ও জাতি সুখ শান্তি কামনায় অনেকে এই দিনটিতে মানস করে থাকেন এই মন্দিরে এসে বলি দিয়ে পূরণ করে থাকেন।
এদিকে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের পাশে খাগড়াপুর এলাকায় জেবিসি পূজামণ্ডপে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী দেবী দূর্গাকে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সাজিয়েছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তমাল দাশ জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছি।
তারাও সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। এ বছর জেলায় ৬১টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হচ্ছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, পুলিশের বিশেষ টিম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে পূজা উদযাপন কমিটিদের সাথেও সভা করা হয়েছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।