কালীগঞ্জ উপজেলায় বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করলেন ১১২৩৫ জন

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 1 year ago

হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ :
সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী নিগৃহিতা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য সারাদেশ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখ থেকে অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু করে। যা চলে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২০ সেপ্টেম্বর। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় তিনটি বিভাগে সর্বমোট  ১১ হাজার ২ শত ৩৫ জন ভাতা প্রত্যাশী অনলাইনে আবেদন করেন। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় শুধু বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৬ হাজার ৪ শত ৪ জন,বিধবা ভাতার জন্য আবেদন পড়েছে  ৩ হাজার ৯ শত ও প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদন পড়েছে  ৯ শত ৩৫ জন।ইউনিয়ন ভিত্তিক আবেদনকারীর পরিসংখ্যান উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে যানা যায়, সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৪ শত ৭৭ জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ৪৫ জন। জামাল ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৩ শত ৯৫ জন এবং বিধবা ভাতায় ১ শত ৭০ জন।কোলা ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৭ শত ১৫  জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ৮৬ জন। নিয়ামতপুর ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৪ শত ৯৩ জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ১৯ জন। শিমলা রোকনপুর ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ১ শত ৪৫ জন এবং বিধবা ভাতায় ৭৪ জন। ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৫ শত ২১ জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ৭৯ জন।রায়গ্রাম ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৬ শত ১৮ জন এবং বিধবা ভাতায় ৩ শত ৭২ জন।মালিয়াট ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৪ শত জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ১৭ জন। বারোবাজার ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৬ শত ৪৯ জন এবং বিধবা ভাতায় ৪ শত ৮৪ জন।কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৩ শত ৭০ জন এবং বিধবা ভাতায় ২ শত ৮৬ জন।রাখালগাছী ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতায় ৬ শত ৭৩ জন এবং বিধবা ভাতায় ৩ শত ২১ জন। কালীগঞ্জ পৌরসভায় অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন জামা পড়ে ৯ শত ৪৮ জন এবং বিধবা ভাতায় ১ হাজার ২৫ জনের। ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার মধ্যে সবথেকে বেশি বয়স্ক এবং স্বামী নিগৃহীতা বা বিধবা  ভাতার আবেদন জমা পড়তে দেখা যায় কালীগঞ্জ পৌরসভায় । ২০২৩-‘২৪ অর্থবছরে সরকার সারা দেশে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য মোট বরাদ্দ  ৫ লাখ ৩৫ হাজার, বয়স্ক ভাতার জন্য ১ লাখ এবং স্বামী নিগৃহীতা বা  বিধবা ভাতার জন্য ১ লাখ জনগণকে এই সুবিধার আওতায় আনবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।বিগত অর্থ বছরগুলোতে  বরাদ্দ অনুযায়ী উপকারভোগীদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হলোও এবারই প্রথমবারের মতো সিটিএম প্রোজেক্ট এর অধীনে ভাতার আধুনিককায়ন কার্যক্রম এর আওতায় অনলাইনে আবেদন নেওয়া হয়েছে। এতে করে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে বয়স্ক, স্বামী নিগৃহীতা বা বিধবা এবং প্রতিবন্ধী জনসমষ্টির সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে।২০২৩-‘২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত ভাতাভোগী বাছাইয়ের পর অবশিষ্ট আবেদনকারীরা অনুমোদিত অপেক্ষমান তালিকায় সংরক্ষিত থাকবেন। পরবর্তীতে এই তালিকা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের প্রতিস্থাপন করা  হবে।বয়স্ক ভাতার আবেদনের জন্য পুরুষদের বয়সসীমা ৬৫ বছর এবং মহিলাদের ৬২ বছর পূর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। স্বামী নিগৃহীতা বা বিধবাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হতে হবে। শুধু তাই নয় আবেদনকারী প্রত্যেককে নগদ হিসাব চালু করে আবেদনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে পূর্বের থেকে এবার উপকার ভোগীদের ভাতার টাকা পেতে কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না বলে আশাকরা যাচ্ছে।বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলায় বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন সর্বমোট  ১৯ হাজার ৫ শত ৪৯ জন। এর মধ্যে মাসে  ৬ শত টাকা করে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৯ হাজার ১ শত ৪৫ জন।মাসে ৫ শত ৫০ টাকা করে স্বামী পরিত্যক্তা বা বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪ হাজার ৭ শত ৭০ জন। মাসে ৮ শত করে টাকা পাচ্ছেন ৫ হাজার ৬ শত ৩৪ জন উপকারভোগী। অনলাইনে ভাতার জন্য আবেদন করেছেন নাসিমা আক্তার নামের এক প্রতিবন্ধী নারী,বয়স্ক ভাতার জন্য আবুল হাশেম মন্ডল এবং বিধবা ভাতার জন্য নুরজাহান বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা নিজেদের আবেদন নিজেরা করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এখন চূড়ান্তভাবে ভাতা প্রদানের  তালিকাভুক্ত হতে পারলেই তারা খুশি।
উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু জানান,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকার সব ক্ষেত্রে ডিজিটালেইশন এর আওতায় আনছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার অনলাইনে ভাতার জন্য নিজে আবেদন করেছেন সব ইউনিয়নের ভাতা প্রত্যাশী মানুষ। এ প্রক্রিয়াকে আমি সাধুবাদ জানাই।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান,বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য(যে কোনো স্থানের  অনলাইন কম্পিউটার চার্জ ব্যতীত) টাকা নেওয়া বা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। তিনি ভাতা প্রাপ্তির জন্য কারো সাথে কোন প্রকার অর্থনৈতিক লেনদেনের জড়িত না হওয়ার পরামর্শ দেন আবেদনকারীদের । বাংলাদেশ সরকারের মহতী উদ্যোগকে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য আমরা শতভাগ সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছি বলেও তিনি জানান।
error: Content is protected !!