হুমায়ুন কবির কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় সহপাঠীদের সামনে দুই ছাত্রকে নাকে খত
দেওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরের
দিকে ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার বগেরগাছি নওদাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যলয়ে।
তারা হলেন, বগেরগাছি গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র
মেহেরাব হোসেন অভি ও একই গ্রামের আলম হোসেনের ছেলে ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মেশকাত
হোসেন।
৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মেহেরাব হোসেন অভি জানায়, অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সে স্কুলে
যায়। স্কুলে যাওয়ার পর রিফাত নামের এক বন্ধু তাকে রিডিং পড়তে বলে। রিডিং পড়ার পর তার
বন্ধু তাকে বলে তুই রিডিং পড়তে পারিস না। তুই একটা পাগল। এরপর সে স্কেল দিয়ে
বাড়ি মেরে দেয়। এরপর সে রিফাতকে একটি চড় মারে। এরপর রিফাত প্রধান শিক্ষকের কাছে
যায়। পরে প্রধান শিক্ষক তাকে ডাক দেয়। যাওয়ার পর পর প্রধান শিক্ষক তার সহপাঠীদের ডাক
দিতে বলে। সহপাঠীরা আসার পর প্রধান তাকে বলেন নাকে খত না দিলে সবাইকে মারবো।
এরপর সে ভয়ে সবার সামনে নাকে খত দেয়। এ সময় ৭ম শ্রেণির মেশকাত হোসেন নামে
আরো এক শিক্ষার্থীকের সহপাঠীদের সামনে নাকে খত দিতে বলেন প্রধান শিক্ষক। সে
আরো জানায়, আমি আর ওই স্কুলে যাবো না। কিভাবে লজ্জায় সহপাঠীদের সামনে মুখ
দেখাবো। আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবো।
৬ষ্ঠ শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মেহেরাব হোসেন অভি তাদের এসে প্রধান
শিক্ষকের কাছে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে গেলে প্রধান শিক্ষক অভিকে নাকে খত
দিতে বলেন। নাহলে সবাইকে বেত দিয়ে ৫০ বার আঘাত করবে। এরপর মেহেরাব হোসেন
অভি তাদের সামনে নাকে খত দেয়। এছাড়াও ৭ম শ্রেণির মেশকাত হোসেনকে নাকে খত
দিতে দেখা যায়।
মেহেরাব হোসেন অভির বাবা ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইজ্জত আলী
জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সহপাঠীদের সামনে নাকে
খত দেওয়ানো এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি অন্যভাবে শাসন করতে পারতেন। তার ছেলে
আর ওই স্কুলে পড়তে চাই না। এছাড়া সে লজ্জায় আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
তিনি এখন সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তিনি প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি
করেন।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম নাকে খত দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে
জানান, অন্যভাবে শাসন করা হয়েছে। কাউকে নাকে খত দেওয়ানো হয়নি।
ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, কোন
শিক্ষার্থীকে মানসিক কষ্ট দেওয়া যাবে না। নাকে খত দেওয়ানোর তো প্রশ্নই আসে না।
লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।