হুমায়ন কবির,কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:
ঝগড়া হয়েছে ছেলের বউয়ের সাথে,সে কারনে ছেলে গর্ভধারিনী মাকে পিছন থেকে আঘাত করে চরমভাবে রক্তাত্ব করেছে।ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জর্দ্দারপাড়া গ্রামে।স্থানীয়রা আহত মা লালভানুকে (৭৮) উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।আহত লালভানুর মাথায় সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।কান্না জড়িত কন্ঠে লালভানু এই প্রতিবেদককে জানান ,২৫ বছর ধরে মানুষের বাড়িতে কাজ করে ছেলেদের মানুষ করেছেন তিনি ।আর সেই ছেলেরাই এখন তাকে খেতে দেন না ।ছোট-খাটো ঝামেলা ইচ্ছা করে বাধিয়ে ছেলেরা আমার গায়ে হাত তোলে নিয়মিত ,যেন আমি বাড়ি থেকে চলে যাই ।তিনি আরো বলেন ,আপনারা আমাকে বাঁচান ,তবে আমার ছেলেকে কিছু বইলেন না। লালভানু জানান ,তার বাড়ি কুমিল্লায়।৬০ বছর আগে তার বিয়ে হয় ।বিয়ের পর কালীগঞ্জে স্বামীর বাড়িতে এসে দেখেন তার জমিজমা বলতে কিছুই নেই ।তবু নিয়তিকে মেনে স্বামীর সংসার করতে শুরু করেন ।একে-একে ৫ সন্তান হয় লালভানুর ।ছোট ছেলে কামরুল ইসলাম জন্ম নেওয়ার পরে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে ঝিনাইদহ সদরে চলে গেছেন।এরপর মানুষের বাড়িতে কাজ করে সন্তানদের মানুষ করেছেন তিনি ।বড় ছেলে মনিরুল ইসলাম (৫০) বিয়ে করে উপজেলার বলরামপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন।মেঝো ছেলে আনারুল ইসলাম থাকেন গ্রামে ও ছোট ছেলে কামরুল ইসলাম থাকেন কালীগঞ্জ শহরে ।তিনি আরো জানান ,মেঝো ছেলে আনারুল ইসলাম বিয়ে করেছে ২৬ বছর আগে ।বিয়ের এক বছর পর থেকে আমাকে দেখা-শোনা করা বাদ দিয়ে দিয়েছে সে ।সামান্যতেই ছেলে আনারুল ও বৌমা পিনজিরা খাতুন তাকে মারধর করেন।সর্বশেষ শুক্রবার মাছ কাটা নিয়ে বৌমা পিনজিরা তার সাথে উদ্দেশ্যমূলক খারাপ আচরন করে।এ সময় ছেলে আনোয়ারুল আসলে লালভানু ভয়ে সেখান থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে পিছন থেকে ছেলে তাকে শক্ত লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে । অশ্রুসিক্ত নয়নে কথা বলা লালভানু আরো জানান ,আমি ছেলের ভয়ে বাড়ি যেতে পারছি না । ছেলে আনারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার সময় এমনটা হয়েছে।আমি ভুল করেছি,এটা করা আমার ঠিক হয় নি ।