হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দিন দিন ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বর্তমানে ডেঙ্গু আতংক বিরাজ করছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পর্যন্ত ১৩১ জন রোগী ডেঙ্গু চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে আরো ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে। তাদের মশারির মধ্যে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোন পদক্ষেণ দেখা যাচ্ছে না অভিযোগ পৌরবাসীর। শহরের বেশকিছু রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে রয়েছে। ড্রেনেজ অবস্থা রয়েছে নাজুক। যেখানে ডেঙ্গুর লারভা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিজ্ঞজনেরা জানিয়েছেন। সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপজেলা প্রশসান সভা করে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। যা শুধু সভা সেমিনারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।মেইন বাসস্ট্যান্ডের ফল ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, কালীগঞ্জ পৌর সভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না। যার কারনে সঠিকভাবে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। এছাড়া পৌরসভা থেকে ঠিকমত ড্রেন পরিস্কার করা হয়না। ঠিকমত মশক নিধণে স্প্রে ব্যবহার করতে দেখা যায় না। যার কারনে সন্ধ্যার পর মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠতে হয়।এদিকে বর্তমান সময়ে সামান্য ঠান্ডা,কাশি জ¦রে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ডাক্তারের কাছে গেলে তাদের ডেঙ্গু পরীক্ষা নিরীক্ষা জন্য বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে সিবিসি, এমএসওয়ান, আইজিএম, আইজিজি। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে রোগিদের গুনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। অথচ সরকারি হাসপাতালে মাত্র ৫০ টাকা ফি তে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাচ্ছে।কালীগঞ্জ সিটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সিইও মনজুর হোসেন জানান, আমরা রোগিদের প্যাকেজের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে থাকি। সেক্ষেত্রে সরকারি নিয়মে প্যাকেজ করে রোগি প্রতি এক হাজার টাকা নেওয়া হয়। তবে রোগিদের অভিযোগ ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়া সাথে সাথে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের লোকজন বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। ডাক্তারদের তারা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগি পাঠানোর জন্য বলছেন। এসব উপসর্গ নিয়ে ডাক্তার কাছে যাওয়া মাত্রই ডাক্তাররা রোগি পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। বিনিময়ে ডাক্তারাও রোগি প্রতি কমিশন পাচ্ছেন ডায়াগনষ্টিন সেন্টার থেকে।কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (ডিজিজ কন্ট্রোল) শিশির কুমার সানা জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা আতœরিকভাবে রোগিদের চিকিৎসা দিচ্ছি। হাসপাতালে আলাদাভাবে ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা হয়েছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রত্যকে সচেতন হতে হবে।কালীগঞ্জ পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করণীয় আমরা তার সবকিছুই করছি। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, ওষুধ ছিটানো, মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণসহ মানুষদের সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এজন্য পৌরসভার ১০টি টিম কাজ করছে। প্রতিদিন বিকেলে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।