কালীগঞ্জে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরু ছাগলের মাংস বিক্রির অভিযোগ

লেখক: Champa Biswas
প্রকাশ: 1 year ago

হুমায়ুন কবির,কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যত্রতত্রভাবে মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে যে যার মত যেখানে সেখানে মাংসের দোকান খুলে বসেছে। এসব স্থানে অস্বাস্থকর পরিবেশে মাংস বিক্রি হচ্ছে। মাংস বিক্রির পর দোকানগুলির মধ্যে কুকুর শুয়ে থাকে। অনেক সময় মাংস কাটার কাঠের গুড়ি কুকুরে চেঁটে থাকে। আর কুকুর শুয়ে থাকা সেই খাটের উপর মাংস রেখে বিক্রি করা হচ্ছে। নিয়ম রয়েছে পশু জবাইয়ের পূর্বে গরু ছাগলের পরীক্ষা করার। কিন্তু পরীক্ষা নিরীক্ষা তো দুরের কথা কোন স্বাস্থবিধিই মানা হচ্ছে না কালীগঞ্জে মাংস বিক্রির ক্ষেত্রে। শহরের মধ্যে নেই কোন পশু জবাইয়ের কসাইখানা। যার কারনে ক্রেতারা সুস্থ না অসুস্থ গরু ছাগলের মাংস কিনছেন তা তারা নিজেরাও জানেন না। আর খাতা কলমে এসব দেখভাল করার জন্য কর্মকর্তারা থাকলেও বাস্তবে তাদের কোন কর্মকা- পরিলক্ষিত হয় না।জানাগেছে, কালীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার, হাটচাঁদনী, নলডাঙ্গা রোড, হাসপাতাল রোড, কাঠের ব্রিজের মুখ, নীমতলা বাসস্ট্যান্ডসহ বেশ কিছু স্থানে গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। এসব মাংস বিক্রেতারা কোথায় কখন কিভাবে গরু ছাগল জবাই করেন তা কেউ জানে না। নিজেদের ইচ্ছেমত রুগ্ন ও অসুস্থ গরু ছাগল যেখান সেখানে জবাই করে দোকানে এনে এরা বিক্রি করছেন বলে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন।গরু ও ছাগল জবাইয়ের পূর্বে ভেটেরিনারী কর্মকর্তাদের উপস্থিততে স্বাস্থ পরীক্ষার পর তা জবাই করার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে সেটা করা হচ্ছে না। কোথায় কিভাবে এসব পশু জবাই হচ্ছে তাও জানেন না স্যানেটারি ইন্সপেক্টর।অভিযোগে আরো জানাগেছে, যেখানে সেখানে গরু ও ছাগল জবাই করে সেটা কয়েকজন মাংস বিক্রেতা ভাগ করে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। মাংস ঝুলিয়ে বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও সেসব নিয়মনীতি তোয়াক্কা করেন না বিক্রেতারা।এসব অভিযোগের ব্যাপারে নতুন বাজারের ছাগলের মাংস বিক্রেতা কবির হোসেন জানান, তিনি নিজ বাড়ি থেকে ছাগল জবাই করে দোকানে এনে বিক্রি করেন। জবাইয়ের পূর্বে ছাগলের কোন স্বাস্থ পরীক্ষা তিনি করেন না। বিক্রি শেষে দোকান অরক্ষিত অবস্থায় রেখে যান এবং সেখানে কুকুর শুয়ে থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। এখন থেকে দোকানটি ঘিরে রাখবো। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।শিবনগর গ্রাম থেকে মাংস কিনতে আসা শমসের আলী জানান, অস্বাস্থকর পরিবেশে মাংস বিক্রি হচ্ছে জেনেও অনেকটা বাধ্য হয়ে তা কিনতে হচ্ছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকরি ব্যবস্থা না নিলে সারাদিন চিৎকার করলেও তাতে কোন কাজ হবে না।  কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর কবির জানান, অনেক সময় অস্বাস্থকর পরিবেশে মাংস বিক্রি হয়ে থাকে। আমরা সেটা নিয়মিতবাবে দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু পৌর এলাকার মধ্যে কোন কসাইখানা নেই। একটি ছিল। কিন্তু সেটি নষ্ট হয়ে পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে। এরপর নতুন করে আর কোন কসাইখানা করা হয়নি। কসাইখানা নির্মাণ আমি তো করতে পারি না এ ব্যাপারে আপনি পৌর মেয়রের সাথে কথা বলেন।  কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রেজাউল ইসলাম বলেন, এটি দেখভাল করবেন পৌরসভা। এখানে আমাদের কোন এক্টিভিটিস নেই। তবে পৌর সভার নিজস্ব জায়গা থাকলে আমরা প্রজোক্টের মাধ্যমে একটি ভাল কসাইখানা করে দিতে পারি। এ ব্যাপারে আমি মেয়রের সাথে কথাও বলেছি।কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, এটি তো পৌরসভার দায়িত্ব। আমি স্যানেটারি ইন্সপেক্টরকে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে বলবো। এছাড়া স্বাস্থবিধি না মেনে পশু জবাই ও বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

error: Content is protected !!