নিজস্ব প্রতিবেদক:
তেভাগা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কমরেড অমল সেনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরের বাকড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই স্মরণ কর্মসূচিতে প্রথম দিনে তাঁর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কমিটির সভাপতি কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, সদস্য সচিব বিপুল বিশ্বাস, সহ-সভাপতি কঙ্কন পাঠক এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গার্ড অব অনার প্রদান করে এবং স্বেচ্ছাসেবক দল রেড স্যালুট জানায়।
বিকেল ৩টায় সরলা সিং মঞ্চে “বৈষম্যহীন সমতার সমাজ” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমরেড কঙ্কন পাঠকের সভাপতিত্বে এ সভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, প্রফেসর ইসরারুল হক, অধ্যাপক মফিজুর রহমান রুন্নু, কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন কমরেড বিপুল বিশ্বাস। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।
০৩ দিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, শিশু-কিশোর ও নারীদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাইকেল রেসলিং, চেয়ার সিটিং প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৯১৩ সালের ১৯ জুলাই নড়াইলের আফরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কমরেড অমল সেন। কৈশোরেই তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৩৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। কৃষক আন্দোলন এবং সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রণী।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন এবং পাকিস্তান আমলে দীর্ঘ ১৯ বছর কারাবন্দি ছিলেন। ১৯৮০ সালে গঠিত বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হন।
২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং ১৭ জানুয়ারি যশোরের বাকড়ীতে সমাধিস্থ হন।
উল্লেখ্য, কমরেড অমল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই কর্মসূচি নতুন প্রজন্মকে সমাজতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।