মোহাম্মদ মিলন আকতার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দিন দিন ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে মাটির তৈরি জিনিসের বিকল্প হিসেবে বাজার দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ও সিরামিক।
ফলে আধুনিক প্রযুক্তির তৈরি জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি অনেক পণ্য। তবে মাটির তৈরি কিছু জিনিসপত্র এখনো বাজারে পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। শহরে মাটির তৈরি ফুলদানি ও বাহারি মাটির হাঁড়ির এখনো কদর রয়েছে।
বলছিলাম –
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকঁচা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। তারা তৈরী করেন মাটির হাঁড়ি, পুতুল, কলসি, প্রদীপসহ রকমারি জিনিসপত্র। তবে সময়ের পরিবর্তনের কারণে বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প।
মৃৎশিল্পিরা বলছেন, বর্তমান বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মাটির তৈরী জিনিসপত্রের কদর কমে গেছে। ফলে জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হচ্ছে। তবে ঐতিহ্যের টানে এখনও এই শিল্পে জড়িত রয়েছেন বলে জানালেন মৃৎশিল্পীরা।
তবে জেলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আধুনিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য উৎপাদন করলে এই শিল্প হারাবে না। বরং কদর আরও বাড়বে।
এদিকে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলছেন, সরকারি সুযোগসুবিধা পেলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
আঁকচা পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা আশাবাদী, সবার সহযোগিতা পেলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।
উল্লেখ্য, আঁকচা ইউনিয়নে পাল সম্প্রদায়ভুক্ত প্রায় ৭০০ পরিবার বাস করেন। এক সময় ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে ঘিরে ছিল বছরব্যাপী অবিরাম কর্মযজ্ঞ। কালের বিবর্তনে দিনে দিনে এর ব্যাপ্তি কমতে শুরু করেছে। এখন কমবেশি ২০০ পরিবার এ পেশায় সম্পৃক্ত রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।