অনলাইন ডেস্কঃ
আনসারকে আটক ও তল্লাশির ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবে সংশোধনী আনার সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। ‘আটকের বদলে ‘ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা’ নেওয়ার বিধান যুক্ত করতে সুপারিশে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।
এর আগে গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’ সংসদে তুলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিলে আনসার ব্যাটালিয়নকে আটক, তল্লাশি ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। এটি নিয়ে সংসদে আপত্তি জানিয়েছিলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম।
সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সভাপতি বেনজীর আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংশোধনীর প্রস্তাব এসেছে। একটা আইন আছে, ওই আইনের ধারায় তারা পরিচালিত হবে। এখতিয়ার ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে। আটক ও তল্লাশির যে বিষয়টি বিলে রয়েছে সংসদীয় কমিটির সুপারিশে তা থাকছে না।
এর আগে প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছিল, ‘কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, কোনও স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।
এ নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের মধ্যে বেশি ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেন।
পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা
হয়েছিল, আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ১৯৯৫ এর
ধারা-৮(২) অনুযায়ী আনসার ব্যাটালিয়ন একটি
সহায়ক বাহিনী। আটক, তল্লাশি, জব্দ ও জব্দ
তালিকা প্রস্তুত করার বিষয়টি অপরাধ দমন ও
উদঘাটনের ধারাবাহিক কার্যক্রম; যা ফৌজদারি
কার্যবিধি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এই কার্যক্রম
পরিচালনার জন্য পুলিশই ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এক্ষেত্রে
আনসার ব্যাটালিয়নকে ঐ সকল কার্যক্রমের কর্তৃত্ব
প্রদান করা হলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। কোনো
আইন প্রয়োগের জন্য একাধিক বাহিনীকে দায়িত্ব
প্রদান করা হলে আইনটি প্রয়োগকালে পারস্পরিক
ভুল বোঝাবুঝি ও দায়বদ্ধতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে
মতভেদসহ নানাবিধ সমস্যাসহ আন্তঃবাহিনী বিরোধ সৃষ্টি হতে পারে।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আনসার বাহিনীকে আটকের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে না। সংসদে বিল তোলার সময়ও মন্ত্রী বলেছিলেন, প্রস্তাবিত বিলে কোনো সাংঘর্ষিক বিধান থাকলে তা সংসদীয় কমিটিতে সংশোধন করা যাবে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মো. হাবিবর রহমান, সামছুল আলম, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, সামিল উদ্দিন আহমেদ ও রুমানা আলী।
এম,এম,হোসেন/নিউজবিডিজার্নালিস্ট২৪