বিক্রম সাগর:
যশোরে প্রধান শিক্ষককে পা ধুইয়ে ঘোড়ার গাড়ীতে করে বিদায়ী সংবর্ধনা
পূর্ব আবাদ কচুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনুর রহমানের বিদায় সংবর্ধনা। ক্রেষ্ট প্রদান ও উপহার প্রদান ও পা ধুয়ে সম্মান প্রদশর্ন ও ঘোড়ার গাড়িতে করে রাজকীয় ভাবে বাড়িতে পৌছে দেন সকল স্তরের জনগন ও এলাকাবাসী ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অফসার জনাব আসাদুজ্জামান বিশেষ অতিথী হিসাবে উপস্থিত ছিলে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মাহমুদ হোসেন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতিবন্দ, কমিটির সদস্যবন্দ সহ এলার সর্বস্তরের জনগন।
চলে যাওয়া মানে প্রস্হান নয়, বিচ্ছেদ নয়, চলে যাওয়া মানে নয়, বন্ধন ছিন্ন করা।
Education is a process which develops our body, mind and soul. অর্থাৎ, শিক্ষা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা আমাদের দেহ, মন ও আত্মাকে উন্নত করে। অন্যান্য প্রানীদের সাথে মানুষের পার্থক্য এখানেই। গরুকে গরু হতে হয় না, বাঘকে বাঘ হতে হয় না, কিন্তু মানুষকে মানুষ হতে হয়, আর সেটা আর্জন করতে ছাত্রছাত্রীদের জীবনে সবচেয়ে বড় গুরু দায়িত্ব পালনীকারী শ্রদ্ধীয় স্যার জনাব শহিনুর রহমান।
একটি মোমবাতি যেমন নিজে পুড়ে জগৎ আলোকিত করে, ঠিক তেমনি স্যার ছিলেন পথ প্রদর্শক তিনি নিজে সময়, যোগ্যতা ও শ্রম দিয়ে পথ দেখিয়েছেন।তার কর্মনিষ্ঠা, প্রজ্ঞা, শিখনকৌশল,ছাত্রদের কে মানুষের মত মানুষ করে গড়তে তার চেষ্টার কোন ত্রুটি ছিলো না।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ড ছাড়া যেমন কোন প্রাণি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তেমনি শিক্ষা ছাড়া কোন জাতির পক্ষেই বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে স্বীয় অস্তিত্ব নিয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসন অর্জন করা সম্ভব না। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত, বিশ্বদরবারে সে জাতি তত বেশি মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত। কাজেই শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। একটি সুশিক্ষিত জাতিই উপহার দিতে পারে একটি সুন্দর দেশ, সুন্দর ভবিষ্যৎ। আর এই ভবিষ্যৎ এর ভিত্তি হচ্ছে আমাদের শিশুরা। আর এই কোমলিত শিশুদের মানুষ করবার দায়িত্ব নিয়ে জনাব শাহিনুর রহমানের এই প্রতিষ্ঠানে আগমন ঘটেছিলো। প্রতিটি শিশু সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে তখন সেই দেশ ও জাতি শান্তি সমৃদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করবে। একজন শিল্পী তার শিল্পকে যেভাবে তিলে তিলে যত্ন সহকারে গড়ে তোলে, ঠিক তেমনি ভাবে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি শিশুর পরিপূর্ণ মেধা বিকাশের নিমিত্তে, তাদেরকে ভালবাসা ও সুশাসনের মধ্য দিয়ে আলোকিত মানুষ হিসাবে তৈরী করতে শাহিনুর রহমানের স্যারের ভূমিকা অতুলনীয় ছিলো।
একটি দেশ ও জাতি উন্নত ও সমৃদ্ধ হয় শিক্ষিত, চরিত্রবান, মানবতাবোধ সম্পন্ন নাগরিকের দ্বারা। সেই নাগরিক তৈরীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় অনবরত কাজ করেছেন তিনি।
আপনি সব সময় সত্যবাদী ও সত্যের পক্ষে কথা বলতেন। সব সময় সত্য কাজে উৎসাহিত করতেন। স্যার বলতেন ” সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য।” একজন শিক্ষকের মধ্যে যে এত গুণাবলী থাকতে পারে,তাকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। তিনি সত্যি সত্যিই ছিলেন ফিলোসোফার ও উত্তম পথ প্রদর্শক দু’এক কথায় বলতে গেলে আপনি একজন আদর্শ শিক্ষক।
তাই বলতে হয়,
এ আঙিনা বলে বিদায়
দেই আর না দেই মনতো ভীষন কাদায়।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, Every farewell is begening a new life অর্থাত প্রতিটি বিদায় একটি নতুন জীবনের শুরু। এই বিদায়ের মাধ্যমে স্যার একটি নতুন জীবনে পদার্পন করবেন। পরিবারকে নতুনভাবে সময় দেবেন।আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় হলেও আমরা আশা করছি স্যার দীর্ঘদিন সকলের মাঝে বেচে থাকুক।ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর ও সাফল্যময় হোক এই কামনা করি।
কবির ভাষায় বলতে হয়, বিদায় বেলার ক্রান্তিলগ্নে ভাড়াক্রান্ত মনে,
কোন ভাষাতে জানাব বিদায় ভাবছি ক্ষণে ক্ষণে।আপনি দীর্ঘায়ু হোন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
শুভ বিদায় স্যার।