মাছ-মাংস কিনতে হিমশিম, আদা, রসুন, পেঁয়াজের ঝাঁজও বেশ

লেখক: mosharraf hossain
প্রকাশ: 1 year ago

অনলাইন ডেস্কঃ

আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কোনোভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষেরা। বাজারে গিয়ে প্রতিদিনই শুনতে হচ্ছে একাধিক পণ্যের দাম বৃদ্ধির দুঃসংবাদ। কখনো কখনো প্রয়োজনীয় পণ্য না কিনেই ফিরতে হচ্ছে। মাছ, মাংস থেকে শুরু করে প্রায় সব পণ্যের দামই বাড়তির দিকে হওয়ায় কোণঠাসা হয়ে পরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অল্প আয়ের মানুষদের।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্যই উঠে আসলো। ক্রেতাদের অভিযোগ একটা পরিকল্পনা করে যদি বাজার করার উদ্দেশ্যে বের হওয়া যায়, তাহলে সেই পরিকল্পনা মাফিক তেমন কিছুই কেনা যায় না। প্রতিদিনই শুনতে হয় একটা না একটা পণ্যের দাম বাড়তির কথা। সব মিলিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষদের অবস্থা খুবই নাজুক।
গত কয়েক দিন ধরে ডিম ও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাছ-মাংস ও মসলা জাতীয় পণ্য। পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমার পর ফের বেড়েছে। অপরদিকে কেজিপ্রতি মাছের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। আর মশলা জাতীয় পণ্যের মধ্যে রসুন, আদা, এলাচসহ অন্যান্যের দামও বাড়তির দিকে।
সম্প্রতি দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু হওয়া তদারকি ও আমদানির সিদ্ধান্তও কাজে লাগছে না। ইতিমধ্যে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও বাজারে এখনও তার প্রভাব পরতে শুরু করেন নি। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। মহল্লার কোনো কোনো দোকানে ১০০ পর্যন্ত কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
রাজধানীর কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকায় এসেছে। বর্তমানে কেজিতেস ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। দেশি রসুন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এর পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতিকেজি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাজারে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।
এক মাসের বেশি সময় ধরে দাম বৃদ্ধি পাওয়া আলুর বাজারে কোনো সুখবর নেই। কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাড়ছে আলুর দাম। বিক্রেতারা অজুহাত দিয়ে বলছেন, ঈদের ছুটি, বৃষ্টি, পরিবহন সংকটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
৫০ টাকার নিচে পেঁপে ছাড়া তেমন কোনো সবজি মিলছে না। এক কেজি সবজি কিনতে বাজারে ৬০ থেকে ৮০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি পটল, চিচিঙা, ছোট শসা, জালি কুমড়া এবং কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। ঝিঙা, বরবটি, রান্না করার শসা, কচুর মুখী, করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গোল বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
অবশ্য আগের তুলনায় দাম কমেছে কাঁচামরিচের। প্রতিকেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে প্রতি ডজন মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। মাংসের বাজারে কোনো স্বস্তি নেই। এক কেজি ব্রয়লার মুরগির কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ পরছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরু ও খাসির মাংস আগের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই।
বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও সেখানে মধ্যবিত্তের যাওয়ার তেমন কোনো সুযোগ নেই। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশের দাম পরছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। প্রতিকেজি রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তেলাপিয়ার কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি আঁটি লাল, মুলা, কলমি শাক ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পুঁই, মিষ্টি কুমড়া, লাউ শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যা আগে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত।
এম,এম,হোসেন নিউজবিডিজার্নালিস্ট২৪
error: Content is protected !!