পাইকগাছা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ
পাইকগাছা হাসপাতালে যত্রতত্র জমে থাকা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধের মধ্যে রোগি নিয়ে অস্বাস্হ্যকর পরিবেশে চলছে ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। উৎকট দুর্গন্ধের তীব্রতায় দিন-রাত নাক-মুখে হাত চেপে চলতে হয় রোগীর সহযোগীতায় আসা স্বজনদের। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ও গোসলখানা সেগুলো বাধ্য হয়ে ব্যবহার করতে হয় রোগিদের। যত্রতত্র ময়লার স্তুপ আর বিড়ালের ছোটা-ছুটি ও লাফা-লাফি অবস্হা দেখে মনে হয় এটি রোগ নিরাময়ের হাসপাতাল নয়,যেন জীবাণুর চারনভূমি। হাসপাতালের প্রধান ডাঃ নীতিশ কুমার গোলদার বলেন,হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর রোগির সুস্হতা অনেকাংশে নির্ভর করে। পরিবেশ দূষিত হলে অপারেশ হওয়া রোগির ক্ষতস্হান সংক্রমিত হওয়ার ঝুকি থাকে। জীবাণুতে আক্রান্ত হতে পারে শ্বাসতন্ত্র, কিডনি এবং সংক্রামক রোগ, যা একে অপরকে ছড়ায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগিকে দেখতে আসা রোগির একস্বজন গদাইপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান,এমন নোংরা পরিবেশে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে রোগি বা স্বজনরা অজানা সংক্রামক ব্যাধি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ীতে। সরেজমিনে দেখা যায়,হাসপাতালের নিচের ড্রেন গুলোতে জমে আছে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি। যেখানকার পচা পানিতে ভেসে আছে মশা ও লার্ভা। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝেগুলো অপরিষ্কার, বিভিন্ন বারান্দায় রোগি ও রোগির স্বজনদের ফেলে দেওয়া ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ছড়ানো ছিটানো। শৌচাগার অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা,রোগিদের জন্য ব্যবহৃত বেড,বেডসিট ও ফোমগুলো নোংরা। নিচতলার জুরুরী বিভাগের কক্ষের দেওয়ালে বৃষ্টির পানি ঘেমে নোংরা ও স্যাঁতসেতে অবস্হা সৃষ্টি হয়েছে। সবমিলিয়ে এক স্বস্তিকর পরিবেশে চলছে পাইকগাছা হাসপাতালের সাধারন ওয়ার্ড,মহিলা ওয়ার্ড,প্রসূতি ওয়ার্ড, ডায়ারিয়া, ডেঙ্গু,শিশু ওয়ার্ড সহ ইমারজেন্সি রোগিদের চিকিৎসা সেবা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিকিৎসাধীন ডায়ারিয়া রোগির এক স্বজন বলেন,আমার অসুস্হ্য স্ত্রীর পাশে সারাদিন থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম না। বাথরুমের যা অবস্হা তার দুর্গন্ধে আমি নিজেই অস্বস্তি বোধ করছি। কয়েকজন রোগি অভিযোগ করে বলেন,দিনে একবার এক বালতি জল দিয়ে হাসপাতালের মেঝে,গোসলখানা ও শৌচাগার পরিষ্কার করেন মাত্র। তাতে কি আর দুর্গন্ধ দূর হয়। অসুস্হ্য ছেলেকে চিকিৎসায় নিয়ে আসা কোকিলা বেগম জানান,ছেলের সাথে ও পাশে তিনদিন থাকার পর হাসপাতালের দুর্গন্ধে আমার পেটে গ্যাস ও জ্বালা পোড়া শুরু হয়েছে। হাসপাতালে জুরুরী বিভাগে কর্তব্যরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার জানান ,এখানে প্রতিদিন রোগি ভর্তি, বর্হিঃবিভাগে রোগি ও রোগির স্বজন মিলে পাচ শতাধিক মানুষ আসা যাওয়া করে।এরপর হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট রেয়েছে।সেকারনে স্বাস্হ্য সম্মত পরিবেশ রক্ষা করা যাচ্ছে না। তাই হাসপাতালের প্রধান ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার বলেন,আমি স্বাস্হ্য সম্মত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে দুর্গন্ধ ও মশার বংশ বিস্তার রোধে ইতিমধ্যে ব্যবস্হা নিয়েছি।