এদেশের স্বাস্থ্যসেবা হোক সুন্দর ও নির্ভরশীল 

লেখক: Rakib hossain
প্রকাশ: 5 months ago

সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটা সুন্দর স্বনির্ভরশীল দেশ গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তিত হচ্ছে। তবে দেশে বন্ধ হচ্ছে না অনিয়ম, দুর্নীতি ও উন্নত স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা। উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন অনিয়ম, দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা ও চিকিৎসা খাতের দুরাবস্থা বেড়েই চলেছে।
অত্যান্ত দুঃখের বিষয় এদেশে উন্নত চিকিৎসার কোনো সু-ব্যাবস্থা নাই, যার ফলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক রোগী ধাংশাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে। দেশের চিকিৎসকের অবহেলা, ঠিকমতো রোগী না দেখা, ভুল চিকিৎসা ও ডায়াগনোসিস এবং অত্যধিক চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে রোগীদের আস্থা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে লাখ লাখ রোগী অপেক্ষাকৃত কম খরচে উন্নত চিকিৎসা পেতে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী  দেশ ভারতমুখী হয়ে পড়ছে। এতে করে প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
একেতো বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে একটা গরীব দেশ হিসাবে স্বীকৃত, তার মধ্য চিকিৎসার জন্য ট্যাক্স, ভ্যাট দিয়ে দেশের বাহিরে পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছে।  এতে করে নিজের দেশের অর্থ দিয়ে বিদেশীদের পকেট ভারি করা হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের ডাক্তারদের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার মান, আধুনিক যন্ত্রপাতি, এমনকি স্বাস্থ্যসেবা এবং এ খাতে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগে দেশ খুব একটা পিছিয়ে নেই।
যন্ত্রপাতি এখন যথেষ্ট উন্নত, তবে সেগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে।’ দেশের কোনো নামি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে, যেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এক ধরনের রোগ নির্ণয় করা হয়, সেখানে বিদেশে গিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যায় একেবারে বিপরীত ফল। এ কারণে দেশে রোগ নির্ণয়ের সঙ্গে জড়িত টেকনিশিয়ানদের দক্ষতার পাশাপাশি আন্তরিকতার প্রশ্ন আসে না কি? এর ভিতরে আবার উপজেলা কিবা মফস্বল বাজারে প্রশাসন ম্যানেজ করে বহু ক্লিনিক খুলে বসেছে সেখানে নেই ভালো যন্ত্রাংশ কিংবা ভালো ডাক্তার, সেখান থেকেও রোগীরা ভোগান্তি খাচ্ছে।
ফলে বিদেশে যারা চিকিৎসাসেবা নিতে যান, তাদের মধ্যে অনেকেই বলেন যে বিদেশমুখী প্রবণতার পেছনে প্রধানত কাজ করে সেখানকার ডাক্তারদের আন্তরিকতার মনোভাব, রোগীকে বেশি করে সময় দেয়া এবং বাণিজ্যিকের চেয়ে সেবার মনোভাব বেশি থাকা। এগুলো আমাদের দেশে খুব একটা বেশি নেই। তবে আমাদের দেশে স্বাস্থ্য খাতে কতটা সেবা ও সুচিকিৎসা পাওয়া যায়, তা ভুক্তভোগীরাই একমাত্রই ভালো জানেন। অনেক চিকিৎসকের রোগীদের প্রতি নিদারুণ অবহেলা, সামর্থ্যরে বাইরে চিকিৎসা ব্যয় এবং অর্থ খরচ করা। আর এই অর্থ খরচ করেও চিকিৎসা ভালো না পাওয়ার কারণে রোগীরা অসহায় হয়ে পড়ে। তবে বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে এ প্রবণতা নতুন নয়, এ নিয়ে রোগীদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
তার উপর ভুল চিকিৎসার কারণে রোগী মৃত্যুর ঘটনা অহরহ ঘটছে। অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই, ডাক্তার ও সংশ্লিষ্টদের ভালো বাবস্থার রোগীদের মনে ইতিবাচক বার্তা দেয় এবং শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদের কাছে সঁপে দিতে দ্বিধা থাকে না। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের চিকিৎসাসেবায় বিষয়টির তীব্র অভাব রয়েছে। বিপুলসংখ্যক রোগীর বিদেশে চিকিৎসাসেবা নিতে যাওয়া এবং দেশের টাকা বাইরে পাঠানোর পেছনে এটাই বড় কারণ। যেখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের জন্য যৌবন, জীবন দিয়ে এদেশকে ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সেখানে তার পাশে থেকে সহযোতা করা যেমন পিছন থেকে অবহেলা এবং দুর্নীতি করে এদেশকে পিছিয়ে দেওয়া চক্রান্ত করা হচ্ছে নই কি?
এর জন্য দরকার! নিজেদের স্বার্থ ও সেবা খাতের বিষয়টি মাথায় রেখে স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টদের মনোভাব পরিবর্তনের উদ্যোগ। এ ছাড়া অন্যান্য খারের মতো চিকিৎসা খাতে বিশ্বমানের টেকনিশিয়ানের অভাব পূরণের উদ্যোগ সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে দ্রুত নেয়া গেলে স্বাস্থ্যসেবা সুন্দর ও সাফল্য হবে এবং চিকিৎসা সেবার জন্য বিদেশমুখী প্রবণতা কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
 মুহা, মোশাররফ হোসেন। 
লেখক, কবি ও প্রানের মেলা জাতীয় কবি পরিষদের সভাপতি।
error: Content is protected !!